উইন্ডিজ হারলেও \’জিতেছেন\’ ব্র্যাথওয়েট

জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ছয় রান। হাতে ছিল ৭ বল। সিঙ্গেল না নিয়ে শেষ বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ছক্কা প্রায় পেয়েও গিয়েছিলেন। একেবারে বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে ক্যাচটি ধরে নেন ট্রেন্ট বোল্ট। আউট হয়ে যান তিনি। তবে ম্যাচ হারলেও হারেননি এ ক্যারিবিয়ান। যেভাবে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন তা বহু দিন মনে রাখবে ক্রিকেট ভক্তরা।

নয় নম্বর ব্যাটসম্যান শেল্ডন কটরেল যখন আউট হলেন তখন জয় থেকে ৪৭ রান দূরে উইন্ডিজ। এরপর বাকী যা করলেন তার সবই এলো ব্র্যাথওয়েটের হাত ধরে। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন জয়ের একবারে প্রান্তে। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। ৫ রানের হারে বিশ্বকাপ থেকে এক প্রকার ছিটকে গেলেন তারা।

১৬৪ রানে ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিল উইন্ডিজের। তখন দল বড় পরাজয়ই দেখছিল। খাঁদের কিনারা থেকে দলকে একাই টেনে তুলেছেন ব্র্যাথওয়েট। কেমার রোচের সঙ্গে ৪৭, শেল্ডন কটরেলের সঙ্গে ৩৪ ও ওশেন থমাসের সঙ্গে ৪১ রানের জুটি গড়েন। যাতে সিংহভাগ রান করেছেন তিনিই। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গে না থাকায় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
\"\"

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করতে পারেনি উইন্ডিজ। দলীয় ২০ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। তবে তৃতীয় উইকেটে শিমরন হেটমায়েরকে দারুণ এক জুটি গড়েন ক্রিস গেইল। স্কোর বোর্ডে ১২২ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এ জুটি ভাঙেন লোকি ফার্গুসন। এমনকি পরের বলে অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে আউট করে ক্যারিবিয়ানদের বড় চাপে ফেলে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, ২২ রানের ব্যবধানে ৫টি উইকেট হারায় উইন্ডিজ। ম্যাচ তো তখনই হেরে বসে দলটি।

৮২ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটি ৯টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজান ব্র্যাথওয়েট। ৪৮তম ওভারে ওভারে ম্যাট হেনরিকে তিনটি ছক্কা ও একটি চারে ২৫ রান নিয়েই জয়ের রাস্তা প্রশস্ত করেছিলেন তিনি। তবে পরের পরের ওভারে জেমস নিশামের বলে করতে পারেননি বাকী রান। ৮৪ বলে ৮টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন ক্রিস গেইলও। এছাড়া ৪৫ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৪ রান করেন হেটমায়ের। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৩০ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন বোল্ট। ৫৯ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান ফার্গুসন।

আগের ম্যাচেই দারুণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর এক জয় এনে দিয়েছিলেন উইলিয়ামসন। এদিন আরও একবার দলের হাল ধরে দলকে এনে দিলেন লড়াইয়ের পুঁজি। খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ১৫৪ বলে ১৪৮ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন তিনি। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান অধিনায়ক।

টস হেরে প্রথম ম্যাচে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। প্রথম বলেই মার্টিন গাপটিলকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন শেল্ডন কটরেল। পঞ্চম বলে তো বোল্ডই করে দেন কলিন মুনরো। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় কিউইরা। তৃতীয় অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রস টেইলরকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন উইলিয়ামসন। গড়েন ১৬০ রানের দারুণ এক জুটি। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। ৯৫ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৬৯ রান করেন টেইলর।

এরপর টেইলর ফিরে গেলেও এক প্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন উইলিয়ামসন। টম লাথামের সঙ্গে ৪৩ ও জেমস নিশামের সঙ্গে ৪১ রানের আরও দুটি কার্যকরী জুটি গড়েন তিনি। তবে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হন অধিনায়ক। শেষ দিকে জেমস নিশামের ২২ বলে ২৮ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯১ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। উইন্ডিজের পক্ষে ৫৬ রানের খরচায় ৪টি উইকেট পেয়েছেন কটরেল। এছাড়া ২ উইকেট নিয়েছেন ব্র্যাথওয়েট।

লেটেস্টবিডিনিউজ/কেএস

Scroll to Top