উপমহাদেশের প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও বর্ষিয়ান বাম রাজনীতিক কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডল (৯৭) আর নেই।
সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের বিপ্লবী এই নেতা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন।
সিপিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জসিম উদ্দিন মণ্ডলের মরদেহ আজ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তাঁর মরদেহ রাজধানীর পুরানা পল্টনের সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেওয়া হবে। পরে সেখান থেকে বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে।
জসিম উদ্দিন মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় ঈশ্বরদী শহরের পশ্চিম টেংরীর মুক্তির মোড়ে নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী ছিলেন। তার অবস্থা অবনতি হলে ২৮ সেপ্টেম্বর তাকে রাজধানীতে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডল বেশ কিছু দিন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. একে খুরশিদ আলমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নেন।
গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে এই পুরোধা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রিয় পলিট ব্যুরোর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। আপাদমস্তক একজন প্রজ্ঞাবান রাজনীবিদ। সু-বক্তা। সারাজীবন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য লড়েছেন, রাজপথে থেকেছেন, জেল খেটেছেন।
কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডলের জন্ম ১৯২২ সালে নদিয়া জেলা (বর্তমান কুষ্টিয়া) দৌলতপুর থানার খালিদাসপুর গ্রামে নানার বাড়িতে। তার বাবা মরহুম হাওস উদ্দিন মণ্ডল। মা মরহুমা জহুরা খাতুন। রাজনীতির হাতে খড়ি কলকাতায়। বৃটিশ খেদাও আন্দোলন, কৃষক আন্দোলন, তে-ভাগা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি জেলে থাকলেও রাজপথের মিছিলে থাকতো তার মন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ গণ অভ্যুত্থানসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন নিবেদিত সংগঠক।
স্বাধীনতার পর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তিনি প্রায় ২৩ বছর জেল খেটেছেন। খেটে খাওয়া মানুষের দাবি আদায়ের জন্য তার যে রাজনীতির দর্শন তিনি সেটা বুকে লালন করে গেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ০২ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ