ঐক্যফ্রন্ট শীর্ষ নেতাদের তোপের মুখে ফখরুলরা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির এমপিরা শপথ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শরিক দলের নেতারা। সমালোচনার জবাবে বিএনপি নেতারা বলেছেন, সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করা হবে।

বিএনপি এমপিদের শপথ নেওয়ার পর সোমবার ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম বৈঠক। সেখানেই জোটের বেশিরভাগ নেতা বিএনপির সমালোচনা করেন বলে সূত্র জানায়। বৈঠকে জোটকে আরও সুসংহত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের ব্যাপারেও আলোচনা হয়। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় ঐক্যফ্রন্টের এ বৈঠক হয়। সূত্র জানায়, বৈঠকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী বিএনপি মহাসচিবের কাছে দলের পাঁচজন এমপির শপথ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। এ সময় আ স ম রবসহ অন্য নেতারাও জোটের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে শপথ নেওয়ায় বিএনপির সমালোচনা করেন। তারা এ বিষয়ে বিএনপির কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেন। তবে গণফোরামের এমপিরাও শপথ নেওয়ায় আগামী বৈঠকে ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় কাদের সিদ্দিকীকে ঐক্যফ্রন্ট ত্যাগ না করতে সব দল থেকে অনুরোধ জানানো হয়। তিনি আগামী বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

ঐক্যফ্রন্টের সাতজন সংসদ সদস্যের শপথ নেওয়ার সঠিক ব্যাখ্যা না পেলে জোটে থাকবেন না বলে গত ৯ মে ঘোষণা দেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেছিলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে ঐকফ্রন্টের অসঙ্গতি নিরসন না হলে ৮ জুন তার দল বেরিয়ে যাবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জোট সম্প্রসারণ ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আ স ম রব সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আগামী সভা হবে। ঐক্যফ্রন্টকে আরও বিস্তৃত ও ব্যাপক করতে হবে। সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার মাধ্যমে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত রাখা হবে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে। তার জীবন হুমকির মুখে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হাজার-হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মীরা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিএনপি ও গণফোরাম নেতাদের উদ্দেশে আ স ম রব বলেন, যদি সংসদ অবৈধ হয়, তাহলে আপনাদের দলের লোকেরা কেন গেল?

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহিদুর রহমান, মমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও যোগ দেন।

বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আমন্ত্রণ না জানানোয় জোটের মধ্যেই সমালোচনা হয়। দলটির নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়কারী হিসেবে আপাতত তিনি নিজেই দায়িত্ব পালন করবেন।

লেটেস্টবিডিনিউজ/কেএস

Scroll to Top