দুইদিন আগে শনিবার (১৮ মে) ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তার হাতে খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সোমবার (২০ মে) সেই আশঙ্কার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চাইছেন, তাকে হত্যা করা হোক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন কেজরিওয়াল।
দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় সেখানকার পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে নিজের নিরাপত্তায় পূর্ণ রাজ্য শাসনের দাবি তোলেন কেজরিওয়াল। ওই দাবি তোলার সময়ে তিনি ব্যক্তিগত কর্মকর্তার হাতে খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
কেজরিওয়ালের আশঙ্কার জবাবে সিনিয়র বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজয় গোয়েল টুইট পোস্টে হিন্দিতে লেখেন, ‘আমি মর্মাহত যে, নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে আপনি দিল্লি পুলিশের নামে দুর্নাম ছড়ালেন। ভালো হয়, যদি আপনি নিজেই আপনার নিরাপত্তা কর্মকর্তা বেছে নেন। সাহায্য দরকার হলে আমাকে বলতে পারেন। আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি’। বিজয় গোয়েল এর পোস্টের জবাবে টুইটারে কেজরিওয়াল হিন্দিতে লেখেন, ‘জনাব বিজয়, আমার নিরাপত্তা কর্মকর্তা নয় বরং মোদিই চায় আমাকে মেরে ফেলা হোক’।
এর আগে পাঞ্জাবভিত্তিক একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কেজরিওয়াল আশঙ্কা প্রকাশ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মতো তিনিও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তার হাতে খুন হতে পারেন। কেজরিওয়ালের এই বক্তব্য আলোচনায় উঠে এলে দিল্লি বিজেপির পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে পুলিশকে কেজরিওয়ালের নিরাপত্তা বেষ্টনি উঠিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র প্রবীন শঙ্কর কাপুরের পাঠানো ওই চিঠিতে পুলিশের উদ্দেশে বলা হয়, তারা যেন মুখ্যমন্ত্রীকে তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেন।
চলতি মাসের শুরুতে একটি রোডশোতে এক ব্যক্তি আচমকা কেজরিওয়ালের কাছে এসে তাকে চড় মারার পর নিরাপত্তা ঘাটতির অভিযোগ তোলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। পুলিশের দাবি ছিল, হামলাকারী ছিল হতাশ এক আম আদমি সমর্থক। তবে কেজরিওয়ালের দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, ওই হামলায় বিরোধীদের মদদ ছিল। পরে কেজরিওয়াল অভিযোগ তোলেন, নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করে তার ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনাই ইঙ্গিত করছে এটা ‘বিজেপির ষড়যন্ত্র’। জুতা, কালি, মরিচ গুড়ার আক্রমণের মুখে পড়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ওইসব হামলাকে ‘দিল্লি ম্যান্ডেট’ এর ওপর হামলা বরে অভিহিত করেন।
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২০১৫ সালে দিল্লির ক্ষমতায় আসে আম আদমি পার্টি। বিধানসভার ৭০ আসনের মধ্যে ৬৭টিতে জয় পায় তারা। তখন থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে তার বিরোধ চলমান। আম আদমি দলের শীর্ষ এই নেতার অভিযোগ, তার সরকারের ওপর হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার।