ইয়াংগুন দুর্ঘটনা: সরকারি হাসপাতালে ভর্তি বিমানের যাত্রীরা বেসরকারিতে স্থানান্তর হচ্ছেন

মিয়ানমারের ইয়াংগুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়া উড়োজাহাজের আহত যাত্রীদের সবাই শঙ্কামুক্ত রয়েছেন। গত বুধবার সন্ধ্যার ওই দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ২০ জনকে ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিরা ভর্তি রয়েছেন অন্য হাসপাতালে।

মিয়ানমার টাইমস শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ২০ জনের সবার আঘাতাই খুব সামান্য। অন্য হাসপাতালে ভর্তিদের অবস্থাও গুরুতর নয়। সবাই শঙ্কামুক্ত। ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. ইউ মাও মাও ও বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের সবাইকে অথোপেডিক ও ট্রমা ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখানে যে ২০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে; তাদের কারোরই জীবন ঝুঁকিতে নেই। অধিকাংশেরই আঘাত খুব অল্প। আমরা তাদের বেসরকারি হাসপাতলে স্থানান্তর করার অনুমতি দিয়েছি। মিয়ানমার টাইমস বলছে, ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহতদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ আর চারজন নারী। এদের মধ্যে ১২ জন বাংলদেশের, তিনজন চীনের, দুইজন মিয়ানমারের, একজন কানাডার, একজন ফ্রান্সের এবং একজন ভারতের নাগরিক।

ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের নিয়্ন্ত্রক খিন থেনগাই মাইন্ট বলেন, আহতদের প্রত্যেকের জন্য আমরা আলাদা আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করেছি। হাসপাতালটির একটি সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সেখানে ভর্তি থাকা ব্যক্তিরা বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সরকারি হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এই মুহূর্তে ইয়াংগুন জেনারেল হাসপাতালের ২০ জন ছাড়া পাইলটসহ অন্য কয়েকজন যাত্রী অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ইয়াংগুন বিমানবন্দরের নির্বাহী কর্মকর্তা চি তং বলেন, আহতদের সুস্থ করে তোলাই আমাদের কাছে অগ্রাধিকারের বিষয়। সবার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।

বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া বৃহস্পতিবারের একটি ছবিতে রানওয়ের পাশে ঘাসের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনাকবলিত ফ্লাইটটিকে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর পাশেই অবস্থান করছিলেন উদ্ধারকারী কর্মীরা।

ঝড়ের কারণে ঘটা ওই দুর্ঘটনার পর বিমান বন্দর বন্ধ থাকায় সর্বমোট ১৮টি ফ্লাইট ইয়াংগুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশ্ববর্তী অন্যান্য বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্ঘটনার দিন বুধবার রাত ৯টার দিকে এটি খুলে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে বিজি-০৬০ উড়োজাহাজটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে যাত্রা করে।

কানাডার বোম্বার্ডিয়ারের তৈরি ড্যাশ-৮ বিমানটিতে এক শিশুসহ ২৯ যাত্রী ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন দু\’জন পাইলট এবং দুই ক্রু। উড়োজাহাজটি বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে ইয়াংগুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ জানিয়েছেন, ইয়াংগুনে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নেওয়া যাত্রীদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

Scroll to Top