ঘূর্ণিঝড় ফণীর ফলে যে সতর্ক সংকেতগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো কমানো হয়েছে। তবে সবাইকে এখনো সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আয়েশা খাতুন।
তিনি জানান, মংলা, পায়রা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে বিপদ সংকেত কমিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এখন আর এটি ঘূর্ণিঝড় আকারে নেই, গভীর নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এর গতিবেগ ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার হবে। আগামীকালও সারাদেশে বৃষ্টিপাত হবে।
গভীর সমুদ্রে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড়টি ভারতের ওড়িশায় আঘাত হেনে পশ্চিম বঙ্গ হয়ে সাতক্ষিরা উপকূল দিয়ে আজ শনিবার সকাল ছয়টায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশে ফণীর প্রভাবে বাতাসের গতিবেগ- ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। যার আয়তন ৫৪ বর্গকিলোমিটার এবং ঘণ্টায় ২৬ কিলোমিটার গতিতে অতিক্রম করছে। রবিশালে সর্বোচ্চ ৭৪ কিলোমিটার বেগে গতিতে আঘাত হানে ফণী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী এ পর্যন্ত চার দফা গতিপথ বদলেছে। শুরুতে এটি ভারতের ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশ-তামিলনাড়ুর দিকে ছিল। পরে তা ওডিশার দিকে মোড় নেয়। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দিকে মুখ করে এগোতে থাকে। গতকাল সকালে তা দ্রুতগতিতে ওডিশার পুরিতে আঁছড়ে পড়ে। ভূমিতে আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫কিলোমিটার।
আজ শনিবার আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, \’এখন (সকাল ১০টা) ফণী খুলনা-সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে সরে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার এবং এটি উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে।\’
শামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ফণী অগ্রসর হয়ে চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ী, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিয়েছে সেভাবে যদি এর প্রথম দিকের যে গতিপথ ছিল, সেটি আঘাত হানতো তাহলে বাংলাদেশে বড় ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এটির গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় বড় ক্ষতির হাত থেকে আমরা বেঁচে গেছি।’
ভারতের ওড়িশ্যায় আঘাত হানার পর পশ্চিমবঙ্গ পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ফনি। আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফনি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকারে শনিবার সকাল ৬টায় সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চল এবং এদের পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং সারাদেশে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।