গণফোরাম নেতা ও সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানকে চেম্বার থেকে বের করে দিয়েছেন গণফোরামের সভাপতি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। দল ও জোটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথমবারের মতো ড. কামালের সঙ্গে দেখা করতে যান মোকাব্বির।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন বলেন, ড. কামাল হোসেন মোকাব্বিরকে চেম্বার থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এর পরপরই ড. কামাল তার পিএসসহ কয়েকজনকে বলেন, ‘ওকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দাও। ফারদার (ভবিষ্যতে) যেন এখানে আর না দেখি।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামিম জানান, মোকাব্বির বেলা ৩টা ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে ড. কামাল স্যারের সঙ্গে দেখা করতে তার চেম্বারে যান। উনি বলেন, ‘স্যার একটু কথা ছিল।’ উত্তরে ড. কামাল স্যার বলেন, ‘আপনার সঙ্গে কোনো কথা নাই, আপনি আমাদের নাম ইউজ (ব্যবহার) করে সংসদে গেছেন, আমাদের ছোট করেছেন, ব্ল্যাকমেইল করেছেন। আপনি চলে যান।’
লতিফুল বারী হামিম আরও জানান, এরপর মোকাব্বির কিছুক্ষণ অবস্থান করলে ড. কামাল স্যার তার পিএসকে ডেকে বলেন, ‘উনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। ফারদার (ভবিষ্যতে) যেন না দেখি।’ মোকাব্বির যাওয়ার পর ড. কামাল তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরেকজন বলেন, সেখানে ড. কামাল স্যারের অনুসারীরা ছিল। মোকাব্বির যাওয়ার সময় তাদের অনেকেই তাকে লাঞ্ছিত করেছে। ‘বেঈমান বেঈমান’ বলে গুঞ্জন শোনা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে মোকাব্বিরকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও জাতীয় সংসদে গিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করেন মোকাব্বির। ৭ মার্চ গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্টের আরেক সংসদ সদস্য গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর শপথ নেন। দলীয় নিয়ম ভেঙে শপথগ্রহণ করায় তাকেও গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট সাত আসনে জয় পায়। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক গণফোরাম দুই আসনে জয় পায়। এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সুলতান মনসুর এবং গণফোরামের নিজস্ব প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে মোকাব্বির খান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ পাঁচজন নির্বাচিত হন। নির্বাচনের রাতে একে প্রহসনের উল্লেখ করে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।