সরকারি চাকরিজীবীদের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয় বহন করবে সরকার। তবে এজন্য উপকারভোগীদের নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে। এসব বিধান রেখে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘চিকিৎসা বীমা’ নীতিমালা প্রণয়ন করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বীমা) অজিত কুমার পালের সভাপতিত্বে সম্প্রতি এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় কীভাবে সরকারি কর্মচারীদের বীমার আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী নূর।
প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, বীমার সুবিধাপ্রাপ্ত কর্মচারীকে নির্ধারিত হারে প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে। এর বিনিময়ে সরকারি কর্মচারীকে শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারে বেডভাড়া, কনসালটেশন ফি, রুটিন ইনভেস্টিগেশন, মেজর অপারেশন ও ওষুধ ক্রয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ দেয়া হবে।
প্রিমিয়ামের হার এবং ক্ষতিপূরণপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ পরিমাণ বীমা অংকের ওপর নির্ধারিত হবে। প্রস্তাব মোতাবেক সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নয়টি স্লাবে বীমা অংক নির্ধারণ হবে। এ বীমা অংকের ওপর ভিত্তি করে বাৎসরিক সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এবং বাৎসরিক প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ হবে।
বার্ষিক প্রিমিয়ামের পরিমাণ কর্মচারীদের বয়সের ওপর ভিত্তি করে পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করা হবে। প্রতিটি গ্রুপের জন্য নয়টি বীমা অংকের স্লাবের ওপর ভিত্তি করে নয়টি ধাপে প্রিমিয়াম পরিমাপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বার্ষিক প্রিমিয়ামের পরিমাণ কর্মচারীর বয়সের ওপর ভিত্তি করে পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রতিটি গ্রুপের জন্য নয়টি বীমা অংকের স্লাবের ওপর ভিত্তি করে নয়টি ধাপে প্রিমিয়াম পরিমাপের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ ৪৫ প্রিমিয়াম অংক নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে বিমাগ্রহিতা কর্মচারী যেসব ক্ষেত্রে বীমার সুবিধা পাবেন না এরূপ ১৬ দফা সম্বলিত একটি তালিকা প্রস্তুতের প্রস্তাব দেন জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালুর জন্য জীবন বীমা কর্পোরেশনের প্রস্তাব পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, জীবন বীমা কর্পোরেশন ও সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারীদের জন্য চিকিৎসা বীমা প্রবর্তন-সংক্রান্ত বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বীমা) অজিত কুমার পালকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই কমিটির পরবর্তী বৈঠক বুধবার (৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা বীমা প্রবর্তনের উপায় অনুসন্ধান করবে এ কমিটি। জীবন বীমা কর্পোরেশন কর্তৃক উত্থাপিত সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা বীমা প্রস্তাবনাটি যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করবে। সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত গ্রহণ ও তৎপ্রেক্ষিতে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। প্রয়োজনীয় নীতিমালা বাস্তবায়ন পরিকাঠামো সুপারিশমালা তৈরি করে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করবে।