২২তম ফিফা বিশ্বকাপ নিজেদের রেকর্ড জয়ে শুরু করলো সাবেক চ্যাম্পিয়ন স্পেন। গতকাল গ্রুপ-ই’তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কাতার বিশ্বকাপে সর্বশেষ দল হিসেবে সুযোগ পাওয়া কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে স্পেন। স্পেনের পক্ষে জোড়া গোল করেছেন ফেরান তোরেস। এ ছািড়া দানি ওলমো-মার্কো আসেনসিও-গাভি-কার্লোস সোলার ও আলভারো মোরাতা ১টি করে গোল করেন।
কোস্টারিকার বিপক্ষে এই বিশাল জয়ে নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভেঙ্গেছে স্পেন। এর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে বুলগেরিয়ার বিপক্ষে ৬-১ গোলে জিতেছিলো তারা। এবার সে রেকর্ড ভেঙে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মঞ্চে সাত গোলে জিতলো স্পেন।
দোহার আল-থুমামা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার ভালো সুযোগ পেয়ে যায় স্পেন। বাঁ-দিক দিয়ে মিডফিল্ডার পেড্রি গঞ্জালেজের অসাধারণ ক্রস করেলে বল পান স্ট্রাইকার দানি ওলমো। বল পেয়ে সামনে এগিয়ে যাবার পরিকল্পনা না করে পোস্টের ৪০ গজ দূর থেকে দারুন এক শট নেন । তবে ওলমোর শটটি গোলবার ঘেষে চলে যায়।
তবে ১১ মিনিটে গোল করতে ভুল করেননি ওলমো। মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আলতো ছোঁয়ায় ওলমোকে বল দেন মিডফিল্ডার গাভি। বল নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে কোস্টারিকার গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে বোকা বানান ওলমো। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
ওলমোর গোলে লিড নিয়ে স্পেনের পুরনো ঐতিহ্য ফুটে উঠে। ২০০৮ থেকে ২০১২ সালে টিকিটাকা ফুটবল শৈলির জন্য বিশে^ দারুন জনপ্রিয় দল হয়ে উঠেছিলো তারা। এমন টিকিটাকা ধরন দিয়েই ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। সেই টিকাটাকা ফুটবল নৈপুন্যে বল দখলে নিয়ে ২১ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় স্পেন।
বাঁ-প্রান্ত দিয়ে ডিফেন্ডার জোর্দি আলবার ক্রসে তীব্র গতির শটে বলকে কোস্টারিকার জালে পাঠান স্ট্রাইকার মার্কো আসেনসিও(২-০)। এরপরও থমকে যায়নি স্পেন। মধ্যমাঠ থেকে টিকিটাকার পরিকল্পনাকে সামনে রেখে আক্রমনের ধারা অব্যাহত রাখে তারা। এতে ৩১ মিনিটে তৃতীয় গোল পেয়ে যায় স্পেন। ডি বক্সের ভেতর আলবাকে ফাউল করেন কোস্টারিকার ডিফেন্ডার ওস্কার ডুয়ার্তে। পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে স্পেনকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন আক্রমনভাগের খেলোয়াড় ফেরান তোরেস। এই অর্ধের বাকী সময় আর কোন গোল না হলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় করে স্পেন।
এরআগে ১৯৩৪ সালে প্রথম ও শেষবার বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলের লিড নিতে পেয়েছিলো স্পেন। আর এ ম্যাচে ৮৮ বছরের পুরনো রেকর্ড মনে করিয়ে দিলো তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমনের পরিকল্পনা আরো শানায় স্পেন। ৫৪ মিনিটেই মধ্যমাঠ থেকে করা আক্রমন শানিয়ে ম্যাচে দলের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তোরেস।গাভির কাছ বল পেয়ে ডান-দিকে বক্সে ছয় গজ দূর থেকে দারুণ শটে গোল করেন তোরেস। পেনাল্টি থেকে ম্যাচের তৃতীয় গোলটিও করেছিলেন তোরেস।
তোরেসকে দ্বিতীয় গোলে সহায়তা করা গাভিও ৭৪ মিনিটে গোল করে স্কোর শীটে নাম লেখান।দল এগিয়ে যায় ৫-০ গোলে। বড় জয় নিশ্চিত হবার পরযেন স্পেনকে গোলের নেশায় পেয়ে যায়। ম্যাচে শেষদিকে আরও দুই বার বলকে কোস্টারিকার জালে পাঠায় স্পেন। ৯০ মিনিটে মিডফিল্ডার কার্লোস সোলার এবং ইনজুরির টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে গোল করেন আলভারো মোরাতা। ৭-০ গোলেল বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন।
আগামী ২৭ নভেম্বর আল খোরের আল-বায়াত স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী জার্মানির মুখোমুখি হবে স্পেন। একই দিন আল-রাইয়ানের আহমাদ বিন আলি স্টেডিয়ামে জাপানের বিপক্ষে লড়বে কোস্টারিকা।